সৌরজগত সৃষ্টির পূর্বে কী ছিল? What existed before the creation of the solar system?

          وَہُوَ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالۡاَرۡضَ فِیۡ سِتَّۃِ اَیَّامٍ وَّکَانَ عَرۡشُہٗ عَلَی الۡمَآءِ لِیَبۡلُوَکُمۡ اَیُّکُمۡ اَحۡسَنُ عَمَلًا ؕ وَلَئِنۡ قُلۡتَ اِنَّکُمۡ مَّبۡعُوۡثُوۡنَ مِنۡۢ بَعۡدِ الۡمَوۡتِ لَیَقُوۡلَنَّ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اِنۡ ہٰذَاۤ اِلَّا سِحۡرٌ مُّبِیۡنٌ 



          

"আর তিনিই আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেন, তখন তাঁর আরশ ছিল পানির ওপর, তোমাদের মধ্যে কে কর্মে শ্রেষ্ঠ তা পরীক্ষা করার জন্যে। তুমি যদি বল, ‘মৃত্যুর পর তোমরা অবশ্যই উত্থিত হবে,’ কাফিররা নিশ্চয়ই বলবে, ‘এটা তো সুস্পষ্ট জাদু।"

          —হুদ - ৭

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টির পূর্বে তার আরশ ছিল পানির উপরে। বিজ্ঞানের উৎকর্ষতা সাধনের অনেক আগে থেকেই মুসলিমরা এবিষয়ে বিশ্বাস করে আসছে। মুসলিমরা এমন দৃঢ় বিশ্বাস করে যে, এবিষয়ে এমন বিশ্বাস না করলে সে মুসলিম‌ই থাকবে না। অথচ এতো পরে এসে বিজ্ঞান বলছে, সৌর জগতের সৃষ্টির পূর্বে পানি থাকার সন্ধান পেয়েছে। বিষয়টি সত্যিই বিস্ময়কর।

নিচে বিজ্ঞানের গবেষণা প্রদান করা হলো:

পৃথিবীর ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পানি সূর্যের চেয়েও পুরনো। এক গবেষণায় এ কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, পৃথিবীর অন্তত কিছু পরিমাণ পানি সৌরজগতের বাইরে থেকে এসেছে। ফলে জীবনের অপরিহার্য উপাদান পানি শুধু আমাদের সৌরজগতেই নয়, এর বাইরেও আছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ভূপৃষ্ঠের পানির উল্লেখযোগ্য অংশ এসেছে মহাকাশের অন্য কোনো নক্ষত্র থেকে। এ পানি ৪৬০ কোটি বছর আগে সূর্য গঠিত হওয়ার আগেই এখানে মজুদ ছিল। বিজ্ঞানীরা পানির কণায় হাইড্রোজেন ও হাইড্রোজেনের একটি ভারি আইসোটোপ ডিউটারিয়ামের অনুপাত পরীক্ষা করে পানির উৎস বলতে পারেন।

 মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইলসে ক্লিভের নেতৃত্বে একদল গবেষক এ গবেষণা চালান। ইউনিভার্সিটি অব এঙ্কটারের পদার্থ বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের অধ্যাপক টিম হ্যারিস এ গবেষণা প্রতিবেদনের সহলেখক। তিনি বলেন, 'এটি অন্য গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব সন্ধানে আমাদের প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। তিনি বলেন, এতে সৌরজগতের বাইরের কিছু গ্রহে প্রাণের উৎপত্তি ও বিকাশের উপযোগী পরিবেশ ও পানি সম্পদ রয়েছে এমন সম্ভাবনা বেড়ে যায়। মহাকাশ থেকে আসা পানি বা বরফে হাইড্রোজেনের তুলনায় ডিউটারিয়ামের অনুপাত খুবই বেশি। কেননা এটি খুবই নিম্ন তাপমাত্রায় গঠিত হয়ে থাকে।

 জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই উপসংহারে পৌঁছেছেন যে আমাদের সৌরজগতের জলকে গ্যাস এবং ধূলিকণার ঘন মেঘের অভ্যন্তরে তৈরি হতে হবে। এর মানে হল যে জল শেষ পর্যন্ত “ভিজা শিলা” যেমন গ্রহাণু বা ধূমকেতুর মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রবেশ করেছিল তা সূর্যের একটি নক্ষত্রে বিস্ফোরিত হওয়ার আগে বিদ্যমান ছিল।


অ্যান আর্বরের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং গবেষণার অন্যতম লেখক টেড বার্গিন আবিষ্কারটিকে “অসাধারণ” বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন “আপনি যদি ৪.৬ বিলিয়ন বছর আগে ফিরে তাকান, একটি অবিশ্বাস্য গল্প বলা আছে” ।


মানুষের চুলের প্রস্থের চেয়ে সামান্য বড় মাইক্রোস্কোপিক কণা থেকে পৃথিবী তৈরি হয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই কণাগুলোকে “খুব কল্পনাপ্রবণ আত্মা” বলেছেন।

 এই ধূলিকণাগুলি সূর্য থেকে এত বেশি শক্তি সংগ্রহ করবে যে তারা বরফের মতো ঘনীভূত হওয়ার জন্য জলের পক্ষে এত গরম হয়ে উঠবে। “এর মানে হল যে পৃথিবী যখন জন্মগ্রহণ করেছিল, তখন এটি শুষ্ক ছিল,” বার্গিন বলেছেন। “তাহলে এটি একটি আকর্ষণীয় সমস্যা: জল কোথা থেকে এসেছে?”


যদি আমরা বিষয়টিকে আরও সাধারণভাবে বিবেচনা করি, বার্গিন দাবি করেন, আমাদের অবশ্যই জিজ্ঞাসা করতে হবে: মহাজাগতিক সমস্ত জল কোথা থেকে এসেছে? “মহাবিশ্ব জল দিয়ে তৈরি নয়, এটি পরমাণু দিয়ে তৈরি,” তিনি ব্যাখ্যা করেন৷ “সুতরাং, কোথাও কোথাও, কিছু সময়ে, সেই পরমাণুগুলি মহাবিশ্বে একত্রিত হয়েছিল, রসায়নের মাধ্যমে জল তৈরি করতে।”


তথ্যসূত্র:( https://www.jworldtimes.com/old-site/internationalaffairs/physical-geography-study-earths-features/ )

Post a Comment

0 Comments